এপ্রিল ২৬, ২০২২

ইতিকাফের গুরুত্ব এবং ফজিলত।

itikaf ইতিকাফের ফজিলত, ইতিকাফের নিয়ম, ইতিকাফ কত প্রকার এবং কি কি

 ইতিকাফ আরবী শব্দ। এর আভিধানিক অর্থ হলো কোন বস্তুকে অপরিহার্যরূপে ধরে রাখা, কোন জিনিসের উপর নিজেকে দৃঢ়ভাবে আটকে রাখা, শুধু অবস্থান করা। আর ইতিকাফ শব্দের মূল ভাবধারা হলো কোন নির্দিষ্ট লক্ষ্য বিন্দুতে মন-মগজ দৃঢ়ভাবে নিবদ্ধ রেখে অবস্থান করা এমন ভাবে যে সেই দিক হতে দৃষ্টি যেন অন্য দিকে ফিরে না যায়।


আর শরীয়তের পরিভাষায় ইতিকাফ বলা হয় কোন বিশেষ ব্যক্তির কোন মসজিদে অবস্থান করা। যিনি অবস্থান গ্রহণ করেন, তাকে মুতাকিফ বা আকিফ বলা হয়। বস্তুত, আল্লাহর নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে মসজিদে অবস্থান গ্রহণ করা ও থাকাকে ইতিকাফ নামে অবিহিত করা হয়।


তিন ধরনের ইতিকাফ রয়েছে- ওয়াজিব, সুন্নত ও নফল। মান্নতের কারণে ইতিকাফ ওয়াজিব হয়। সেটির পরিমাণ কমপক্ষে ২৪ ঘণ্টা হতে হয় এবং ইতিকাফের মান্নতের সঙ্গে রোজা রাখাও ওয়াজিব। তাই যে কয়দিন ইতিকাফের মান্নত করবে, সে কয়দিন রোজার সঙ্গেই ইতিকাফ করতে হবে। সুন্নত ইতিকাফ হয় রমজানের শেষ দশকে।


রমজানের শেষ ১০ দিন পার্থিব সব কাজকর্ম থেকে মুক্ত থেকে মসজিদে আল্লাহর ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে অতিবাহিত করা এই উম্মতের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা। এটা দুনিয়ার প্রতি আসক্তি কমাতে ও আখেরাতের প্রতি মনোযোগ বাড়াতে অত্যন্ত সহায়ক।


ইতিকাফের ফজিলত সম্পর্কে অন্য হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য একদিনের ইতিকাফ করল, আল্লাহ পাক তার ও দোজখের মধ্যখানে এমন তিনটি পরিখা তৈরি করে দেবেন, যার একটি থেকে অপরটির দূরত্ব হবে পূর্ব ও পশ্চিমেরও বেশি।’ (তিরমিজি ও বায়হাকি)


যে ব্যক্তি ইবাদত মনে করে সওয়াবের নিয়তে ইতিকাফ করে, তার সব সগিরা গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়। নবী করিম (সা.) বলেন, ‘ইতিকাফকারী ব্যক্তি যাবতীয় পাপ থেকে মুক্ত থাকে আর ইতিকাফে লিপ্ত থাকার জন্য কোনো ব্যক্তি বাইরের কোনো নেক কাজ করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত থাকলেও ওই নেক কাজসমূহের পূর্ণ নেকি সে লাভ করবে।’ (ইবনে মাজা)


অন্যত্র ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসুলে করিম (সা.) বলেছেন, ‘ইতিকাফকারী মূলত গুনাহ থেকে দূরে থাকে এবং তাকে ইতিকাফের বিনিময়ে এত বেশি নেকি দেওয়া হবে যেন সে সব নেকি অর্জনকারী।’ (ইবনে মাজা)


হযরত আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে, রাসূল করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমজানের শেষ দশকে ইবাদত-বন্দেগীর কাজে এতই কষ্ট স্বীকার করতেন যা অন্য সময় করতেন না। (তিরমিজী)


শেয়ার করুন