হাদিস লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
হাদিস লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

এপ্রিল ১১, ২০২২

যেসব কারণে রোজা না রাখা বা ভাঙ্গার অনুমতি আছে।

যেসব কারণে রোজা না রাখা বা ভাঙ্গার অনুমতি আছে।

 

রোজা ভাঙ্গার অনুমতি আছে

অসুস্থতার মাসআলা: রােযার কারণে যে রােগ বৃদ্ধি পায় বা রােগ-ভােগ দীর্ঘ হওয়ার প্রবল আশঙ্কা থাকে সে রােগে রােযা ভাঙ্গার অবকাশ আছে। উল্লেখ্য, আশঙ্কা যদি সুস্পষ্ট হয় তাহলে তাে কথা নেই। নতুবা একজন অভিজ্ঞ ও দ্বীনদার চিকিৎসকের মতামতের প্রয়ােজন হবে।

হায়েয-নেফাস ওয়ালি মহিলার মাসআলা: রমযানের দিনে হায়েয-নেফাস অবস্থায় রােযা মাফ। তবে পরে তা কাযা করতে হবে। কিন্তু রমযানের দিনে হায়েয-নেফাস থেকে পবিত্র হলে অবশিষ্ট দিন রমযানের মর্যাদা রক্ষার্থে পানাহার থেকে বিরত থাকা জরুরি। তবে উক্ত ওযরে ছুটে যাওয়া রােযাগুলাের সাথে এ দিনের রােযাও কাযা করবে। হযরত হাসান (রা) বলেন, "সুবহে সাদিকের পর যে হায়েয থেকে পবিত্র হয়েছে সে দিনে বাকি অংশে পানাহার করবে না"। (প্রাগুক্ত)

মাসআলা: পিরিয়ড চলা অবস্থায় মহিলাদের নামাজ মাফ, তা পরে কাযা আদায় করতে হবে না। কিন্তু রােযা যেহেতু বছরে একবার আসে তাই পবিত্র হওয়ার পর রােযা কাযা করতে হবে।

গর্ভবতীর মাসআলা: রােযা রাখার কারণে গর্ভবতী মহিলা নিজের বা তার সন্তানের প্রাণহানি বা মারাত্মক স্বাস্থ্যহানির প্রবল আশঙ্কা হলে তার জন্য রােযা না রাখা বা ভাঙ্গা জায়েয। তবে পরে কাযা করে নিবে।

দুগ্ধদানকারিনী মহিলার মাসআলা: রােযার কারণে সন্তান দুধ না পেয়ে মৃত্যুবরণ করতে পারে এমন আশঙ্কা হলে দুগ্ধদানকারীনীও আপাতত রােযা ভাঙ্গতে পারবে এবং পরে কাযা করে নিবে। হাদীস শরীফে ইরশাদ হয়েছে إن الله وضع عن المسافر الصوم وشطر الصلاة وعن الحامل

. والمرض . رواه الترمذي وقال : هذا حديث حسن

আল্লাহ তাআলা মুসাফিরের জন্য রােযার হুকুম শিথিল করেছেন এবং নামায কমিয়ে দিয়েছেন। আর গর্ভবতী ও দুগ্ধদানকারিনীর জন্যও রােযার হুকুম শিথিল করেছেন। (জামে তিরমিযী ১/১৫২ ৫)।

এপ্রিল ০৪, ২০২২

রমজান মাসের কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল।

রমজান মাসের কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল।

রোজা, সিয়াম বা রমজান মাসে কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল।



রোজাদার ব্যক্তিকে ইফতার করানো: রোজাদার ব্যক্তিকে ইফতার করানো একটি বিরাট সাওয়াবের কাজ। প্রতিদিন কমপক্ষে একজনকে ইফতার করানোর চেষ্টা করা দরকার। কেননা হাদীসে এসেছে: ‘‘যে ব্যক্তি কোন রোযাদারকে ইফতার করাবে, সে তার সমপরিমাণ সাওয়াব লাভ করবে, তাদের উভয়ের সাওয়াব হতে বিন্দুমাত্র হ্রাস করা হবে না’’ [সুনান ইবন মাজাহ: ১৭৪৬, সহীহ]


দান-সদকা করা: এ মাসে বেশি বেশি দান-সদকা করার জন্য চেষ্টা করতে হবে। ইয়াতীম, বিধবা ও গরীব মিসকীনদের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া ও বেশি বেশি দান সদকা করা। হিসাব করে এ মাসে যাকাত দেয়া উত্তম। কেননা রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ মাসে বেশি বেশি দান খয়রাত করতেন। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত: ‘‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন মানুষের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দানশীল আর রমজান মাসে তার এ দানশীলতা আরো বেড়ে যেত’’ [সহীহ আল-বুখারী : ১৯০২]


ইতিকাফ করা: ইতিকাফ আরবি শব্দ। এর অর্থ স্থির থাকা বা অবস্থান করা। ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায় জাগতিক কার্যকলাপ ও পরিবার পরিজন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে সওয়াব-এর উদ্দেশ্যে মসজিদে বা ঘরের নির্দিষ্ট স্থানে অবস্থান করা বা স্থিতিশীল থাকাকে ইতিকাফ বলে। এ ইবাদাতের এত মর্যাদা যে, প্রত্যেক রমজানে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমজানের শেষ দশ দিন নিজে এবং তাঁর সাহাবীগণ ইতিকাফ করতেন। আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত: ‘‘প্রত্যেক রমজানে তিনি শেষ দশ দিন ইতিকাফ করতেন এবং দশ দিন ইতিকাফ করা সুন্নাত। [সহীহ আল-বুখারী : ২০৪৪]


তাহাজ্জুদের নামাজ পড়া: রমাদান মাস ছাড়াও তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ার মধ্যে বিরাট সাওয়াব এবং মর্যাদা রয়েছে। রমজান মাসে এর আরো বেশি ফজিলত রয়েছে। আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত হাদীসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: ‘‘ফরয সালাতের পর সর্বোত্তম সালাত হল রাতের সালাত অর্থাৎ তাহাজ্জুদের সালাত’’ [সহীহ মুসলিম : ২৮১২]


কল্যাণকর কাজে মগ্ন থাকা: এ মাসটিতে একটি ভাল কাজ অন্য মাসের চেয়ে অনেক বেশি উত্তম। সেজন্য যথাসম্ভব বেশি বেশি ভাল কাজ করতে হবে। আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: ‘‘এ মাসের প্রত্যেক রাতে একজন ঘোষণাকারী এ বলে আহ্বান করতে থাকে যে, হে কল্যাণের অনুসন্ধানকারী তুমি আরো অগ্রসর হও! হে অসৎ কাজের পথিক, তোমরা অন্যায় পথে চলা বন্ধ কর। (তুমি কি জানো?) এ মাসের প্রতি রাতে আল্লাহ তায়ালা কত লোককে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়ে থাকেন’’ [সুনান আত-তিরমিযী : ৬৮৪]

এপ্রিল ০৩, ২০২২

রোজা বা সাওম পালনের উপকারিতা।

রোজা বা সাওম পালনের উপকারিতা।

রোজা বা সাওম

রোজা বা সাওম ইসলাম ধর্মের পাঁচটি মূল ভিত্তির তৃতীয়। সুবহে সাদেক বা ভোরের সূর্যের আলো থেকে শুরু করে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সকল প্রকার পানাহার, পাপাচার যাবতীয় ভোগ-বিলাস থেকে বিরত থাকার নাম রোযা।


হাদিসে রোজার বর্ননা: রাসুলুল্লাহ (সা.) হাদিসে কুদসিতে বর্ণনা করেন, মহান আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, রোজা আমার জন্য এবং আমি নিজ হাতে রোজার প্রতিদান দান করব।

হযরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, রমজান উপস্থিত হলে জান্নাতের দ্বারসমূহকে উন্মুক্ত করা হয়, দোজখের দ্বারসমূহকে রুদ্ধ করে দেওয়া হয়, আর সকল শয়তানকে করা হয় আবদ্ধ। (বুখারী: ১৮৯৯)

চিকিৎসা বিজ্ঞানে রোজা: ব্লাড সুগার ও রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণ করে, রমজানে রোজা রাখার অন্যতম সুবিধা হলো এটি আপনার রক্তে শর্করাকে নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে। রোজা আপনার গ্লুকোজকে ভেঙে দেয় যাতে শরীর শক্তি পেতে পারে যা ইনসুলিনের উৎপাদন হ্রাস করে।

বিভিন্ন প্রকারের প্রদাহ দূর করে থাকে, রমজানে রোজা রাখার আরেকটি শারীরিক সুবিধা হলো এটি প্রদাহজনিত রোগ এবং অ্যালার্জির সারাতে সহায়তা করে। প্রদাহজনিত রোগের কয়েকটি উদাহরণ হলো- আর্থারাইটিস এবং ত্বকের রোগ যেমন সোরিয়াসিস। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন যে, রোজার ফলে আলসারেটিভ কোলাইটিসের মতো প্রদাহজনক পেটের রোগ নিরাময়ের উন্নতি হতে পারে।

ভারতের নেহেরু গান্ধী গোটা জীবন রোজায় অভ্যস্থ ছিলেন। তিনি তার অনুসারীদেরকে বলেন, “রোজার মাধ্যমে আত্মসংযম বাড়ে এবং মানবাত্মা পবিত্রতা অর্জন করে।”
ডা. আর ক্যাম ফোর্ডের মতে, “রোজা হচ্ছে পরিপাক শক্তির শ্রেষ্ঠ সাহায্যকারী।”
ডা. এম. কাইভ বলেন, “রোজা রাখলে শ্লেষ্মা ও কফজনিত রোগ দূরীভূত হয়।”
ডা. ফ্রাঙ্কলিন বলেছেন, “রোজা স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারী; তবে ইফতারিতে বেশি খাওয়া ক্ষতিকর।”
১৯৫৮ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ডা. গোলাম মুয়াযযম সাহেব কর্তৃক “মানব শরীরের উপর রোজার প্রভাব” সম্পর্কে যে গবেষণা চালানো হয়, তাতে প্রমাণিত হয় যে, রোজার দ্বারা মানব শরীরের কোনো ক্ষতি হয় না, কেবল ওজন সামান্য কমে। তাও উল্লেখযোগ্য কিছু নহে, বরং শরীরের অতিরিক্ত মেদ কমাতে এরূপ রোজা আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের খাদ্য নিয়ন্ত্রণ (Dietcontrol) অপেক্ষা বহুদিক দিয়েই শ্রেষ্ঠ। ১৯৬০ সালে তাঁর গবেষণায় প্রমাণিত হয় যে, যারা মনে করে রোজা দ্বারা পেটের শূলবেদনা বেড়ে যায়, তাদের এ ধারণা নিতান্তই অবৈজ্ঞানিক। কারণ উপবাসে পাকস্থলীর এসিড কমে এবং খেলেই এটা বাড়ে। এ অতি সত্য কথাটা অনেক চিকিৎসকই চিন্তা না করে শূলবেদনার রোগীকে রোজা রাখতে নিষেধ করেন। তবে রোজা দ্বারা কোনো কোনো মানুৃষ কিছুটা খিটখিটে মেজাজী হয়। এর কারণ সামান্য রক্ত শর্করা কমে যায় যা স্বাস্থ্যের পক্ষে মোটেই ক্ষতিকর নয়। অন্যকোন সময় ক্ষিদে পেলেও এরূপ হয়ে থাকে।